আপনি কি জানেন বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই ব্লগ পোস্ট টি আপনার অনেক অনেক উপকারে আসবে।
আসসালামু আলাইকুম দর্শকবৃন্দ। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি বিকাশের সুবিধা এবং বিকাশ একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় সে সম্পর্কে আশা করি এ সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়বেন। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। নানা প্রয়োজনে আমাদের বিকাশ অনেক কাজে লাগে।

বিকাশ একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে নানারকম সুবিধা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য সুবিধাসমূহ:
- আমরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মুহুর্তের মাঝে টাকা পাঠাতে পারি।
- ব্যাংকের মতো টাকা জমা রাখতে পারি
- বিকাশের মাধ্যমে আমরা নানা ধরনের বিল দিতে পারি: বিদ্যুৎ বিল , পানির বিল , ইন্টারনেট বিল ইত্যাদি নানান ধরনের বিল দিতে পারি।
- এর মাধ্যমে নানা রকমের পণ্য কেনাকাটা করা যায়।
- বিকাশ এর মাধ্যমে আমরা সহজেই টাকা তুলতে পারি।
- বিকাশের মাধ্যমে আমরা বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা উঠানো যায়।
- বিকাশের মাধ্যমে আমরা মোবাইল রিচার্জ করতে পারা যায় যেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ । এখানে কোন ধরনের বাড়তি চার্জ কাটা হয় না।
আমরা ইত্যাদি আরো উপকার লাভ করি এই বিকাশের মাধ্যমে।
বিকাশে একাউন্ট খোলা অনেক সহজ। ঘরে বসে খুব সহজে একাউন্ট খুলা যায়। আজ আমি বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব এই লেখাটির দ্বারা। যাতে করে য কেউ খুব সহজে একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
বিকাশ একাউন্ট দুই ভাবে খুলা যেতে পারে।
১. অ্যাপের মাধ্যমে
২. এজেন্টের মাধ্যমে
এখানে আমি দুটো পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি আপনি তথ্যগুলো জানতে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়বেন ।
অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা
একাউন্ট খোলার পূর্বে যে সমস্ত বিষয় অবশ্যই উপস্থিত রাখতে হবে।
১. মোবাইল নাম্বার লাগবে যে নাম্বারটা একটিভ থাকবে।
২. ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে
৩. স্মার্টফোন থাকতে হবে।
৪. জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
এরপর সর্বপ্রথম প্লে স্টোর বিকাশ অ্যাপ ডাউনলোড করবেন।এরপর ডাউনলোড করে ইন্সটল করবেন । এরপর লগইন অথবা রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করবেন।
তারপর যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই নাম্বারটি দিন। এরপর আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি নাম্বার পাঠানো হবে ।
যে নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলছেন সে নাম্বারটা যদি আপনার মোবাইলে একটিভ থাকে তাহলে সরাসরি কোডটি বিকাশ অ্যাপের মধ্যে গ্রহণ করে নেওয়া হবে। এরপর আপনি কনফার্ম অপশনে ক্লিক করবেন।
এরপর জন্ম নিবন্ধন সাবমিট করতে হবে। এর জন্য সর্বপ্রথম জন্মনিবন্ধনের first-page ছবি তুলে সাবমিট করতে হবে
পরবর্তীতে আবার দ্বিতীয় পেজ ছবি তুলে সাবমিট করুন। তারপর যার এনআইডি দিয়ে একাউন্ট খুলছেন তার একটি সেলফি ছবি তুলতে দিতে হবে। যখন আপনি সেলফি ছবি তুলে সাবমিট করবেন
তখন আপনার অ্যাকাউন্টটি অটোমেটিক খোলা হয়ে যাবে। এই কাজটি খুব সহজে ঘরে বসেই করা যায়
Read More: সুজুকি জিক্সার এফআই এবিএস এর মূল্য এবং সবিস্তার বিবরণী।
এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট কিভাবে খুলবেন
নিজে বিকাশ একাউন্ট না খুলে এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
এ পদ্ধতিতে একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে কয়েকটি জিনিস উপস্থিত রাখা দরকার পড়বে।
1. দুইটা ছবি (পাসপোর্ট সাইজের)
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে
- একটি মোবাইল নাম্বার লাগবে (একটিভ)
উপরের সব জিনিসগুলো নিয়ে বিকাশ এজেন্টের কাছে যাবেন। তারা আপনার একাউন্ট সহজেই খুলে দিবে।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
এরা বিকাশ এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদল। ক্যাশ আউট , ক্যাশ ইন ইত্যাদি নানা রকম সেবা প্রদান করে থাকে তারা। এজেন্টদের জন্য আলাদা পার্সেন্টেজ থাকে।
এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কয়েকটি জিনিস উপস্থিত রাখা দরকার।
- দুইটা ছবি (পাসপোর্ট সাইজের)
2. জাতীয় পরিচয় পত্রের এক কপি ফটোকপি
- একটি মোবাইল নাম্বার (একটিভ)
- আপনার ব্যবসার নাম
- ট্রেড লাইসেন্স. ইত্যাদি
বিকাশে যারা এজেন্ট রয়েছে তাদের কাছে এই সমস্ত জিনিস জমা দিলেই তারা প্রসেসিং করে দেবে
এখন আমরা বিকাশ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেবঃ
ভূমিকা:
বিকাশ হল একটি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম যা বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক লেনদেনের পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে।
2011 সালে চালু হওয়া, দেশের দ্রুত সম্প্রসারিত ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা খাতে একটি শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে।
এর ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস এবং বিস্তৃত এজেন্ট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে।
প্রস্তাবিত সেবাসমূহ:

বিকাশ তার গ্রাহকদের বিভিন্ন আর্থিক চাহিদা মেটাতে বিস্তৃত পরিসরে সেবা প্রদান করে। ব্যবহারকারীরা কেবল তাদের মোবাইল ফোন নম্বর এবং জাতীয়
পরিচয়পত্রের বিশদ প্রদান করে একটি অ্যাকাউন্টের জন্য নিবন্ধন করতে পারেন। একবার নিবন্ধিত হয়ে গেলে, তারা অনুমোদিত এজেন্টদের মাধ্যমে
তাদের বিকাশ ওয়ালেটে অর্থ জমা করতে পারে বা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি তহবিল স্থানান্তর করতে পারে। ব্যবহারকারীরা তারপরে তাদের বিকাশ
ওয়ালেট ব্যবহার করে অর্থপ্রদান করতে, অন্যান্য বিকাশ ব্যবহারকারীদের কাছে অর্থ স্থানান্তর করতে, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করতে, মোবাইল এয়ারটাইম টপ আপ করতে এবং এমনকি অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারেন।
এজেন্ট নেটওয়ার্ক:
বিকাশের সাফল্যের কৃতিত্ব অনেকাংশে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামীণ উভয় এলাকায় ছড়িয়ে থাকা এজেন্টদের বিস্তৃত নেটওয়ার্ককে দায়ী করা যেতে পারে। ছোট দোকান এবং আউটলেটগুলিতে অবস্থিত
এই এজেন্টগুলি মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে, ব্যবহারকারীদের তাদের বিকাশ ওয়ালেট থেকে নগদ জমা এবং উত্তোলন করতে সহায়তা করে। দেশব্যাপী 200,000 এরও বেশি এজেন্টের সাথে,
এমনকি সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যক্তিদের জন্য আর্থিক পরিষেবাগুলিতে সুবিধাজনক অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তির উপর প্রভাব:
সহজলভ্য এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব আর্থিক পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে, বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি এমন ব্যক্তিদের সক্ষম করেছে যারা পূর্বে ব্যাঙ্কভুক্ত ছিল না
বা আন্ডারব্যাঙ্ক ছিল আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে। বিকাশের মাধ্যমে, ব্যবহারকারীরা সহজেই অর্থ পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে পারে, ক্রেডিট অ্যাক্সেস করতে পারে এবং প্রথাগত ব্যাংকিং অবকাঠামোর প্রয়োজন ছাড়াই বিল পরিশোধ করতে পারে।
ভবিষ্যত ভাবনা:
বাংলাদেশ যেহেতু ডিজিটালাইজেশনকে আলিঙ্গন করে চলেছে, ভবিষ্যতে বিকাশের জন্য আশাব্যঞ্জক দেখাচ্ছে। প্ল্যাটফর্মটি ক্রমাগত উদ্ভাবন করছে এবং গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে তার পরিষেবাগুলি প্রসারিত করছে।
উপরন্তু, বিভিন্ন বণিক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্ব বিকাশকে তার নাগাল প্রসারিত করতে এবং আরও বৈচিত্র্যময় আর্থিক পণ্য অফার করার অনুমতি দিয়েছে।
এটি বাংলাদেশের আর্থিক ভূখণ্ডে একটি গেম-চেঞ্জার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিকে নিরাপদ, সুবিধাজনক এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আর্থিক পরিষেবাগুলিতে
অ্যাক্সেস সহ ক্ষমতায়িত করেছে। উদ্ভাবন এবং অন্তর্ভুক্তির প্রতি অঙ্গীকারের সাথে, বিকাশ দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এজেন্ডাকে আরও চালিত করতে এবং আরও আর্থিকভাবে ক্ষমতায়িত সমাজ তৈরি করতে প্রস্তুত।
পরিশেষে
আজকে আমরা জানতে পারলাম বিকাশের সুবিধা এবং কিভাবে খুলতে হয় তার সবিস্তার আলোচনা. এমনকি বিকাশ এজেন্টের একাউন্ট কিভাবে খুলতে হয় তাও জানতে পারলাম লেখাটির মাধ্যমে .
আজকের এই লেখাটি ভালো লেগে থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না. এবং অন্যজনকে সাহায্য করুন এটি শেয়ার করার মাধ্যমে. লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ