বাংলাদেশ মেট্রোরেল সম্পর্কিত সবকিছু

দেশের প্রথম মেট্রোরেল ঢাকা মেট্রোরেল পূর্ণতা পাওয়ার শেষের পথে । শুরু হতে যাচ্ছে উত্তরা থেকে
মতিঝিল পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে মেট্রোরেলের চলাচল। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা
থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা। ৪ ই নভেম্বর
বাকি অংশের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পাচ্ছে এই মেট্রোরেল; যা এমআরটি
লাইন-৬ হিসাবে চিহ্নিত। এ পথে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার
দূরত্বের পথ মাত্র ৩৮ মিনিটে পার হতে পারবেন মেট্রোরেল যাত্রীরা। এলিভেটেড
লাইন হওয়ায় রাজধানীর চিরচেনা যানজটের মুখোমুখি হতে হবে না যাত্রীদের।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথের জন্য ভাড়া প্রদান করতে হবে ১০০ টাকা।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
মেট্রোরেল এর চলাচল
বর্তমানে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করছে। এতে প্রতিদিন
গড়ে প্রায় ৮৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছেন। মতিঝিল-কমলাপুর পর্যন্ত পুরোদমে
চালু হলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং প্রতিদিন ৬ লাখ ৭৭ হাজার যাত্রী যাতায়াত
করতে পারবেন এ মেট্রোরেলে। বিপুলসংখ্যক যাত্রী ট্রেনে যাতায়াত করলে
মেট্রোরেলের নিচে অবস্থিত সড়কে ছোট-বড় যানবাহন সংখ্যা কমে আসবে বলে
ধারণা করা হয়। এতে একদিকে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, অপরদিকে গাড়ির জ্বালানি এবং
পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ব্যয়ও কমে আসবে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে,
সময় সাশ্রয়ের কারণে দৈনিক প্রায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং গাড়ির অপারেশন
খরচ বাবদ আরও ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে; যা জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়াতে অনেকাংশের সাহায্য করবে।
উদ্বোধন
এমআরটি লাইন-৬ মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ ৪ নভেম্বর
২০২৩ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন উত্তরা থেকে আগারগাঁও
পর্যন্ত বাণিজ্যিক চলাচল বন্ধ থাকবে। তথ্য অনুযায়ী সেদিন এমআরটি লাইন-৫-এর
নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এমআরটি লাইন-৫ এর আওতায়
হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পাতাল রেল আর সাড়ে
৬ কিমি. উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে।
জানা গেছে, এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পটি ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত
হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা প্রদান করছে জাইকা।
বাকি ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা খরচ করবে বাংলাদেশ সরকার।
মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদন দেওয়া
হয়েছিল। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাইকার সঙ্গে চুক্তি সই করা হয়। প্রথমে উত্তরা
থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের কথা ছিল।
যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনায় সেটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে অনুমতি দেয়া
হয়েছে। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব এক দশমিক ৬ কিলোমিটার। বর্তমানে
বর্ধিত অংশের অর্থাৎ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজ
চালিয়ে যাচ্ছে কর্মীরা। যদিও নির্মাণকাজের শুরুতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল
নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের বাস্তব কাজ শেষ হয়েছে ৯৮ দশমিক ০৮ শতাংশ।
মেট্রোরেল নির্মাণ
তথ্য অনুসারে, তিনটি ধাপে এই মেট্রোরেল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের উত্তরা
থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও
থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়। এ অংশের কাজের অগ্রগতি ৯৭.৩১ শতাংশ।
তৃতীয় ধাপে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলছে। ২০২৫ সালের জুনে
এ অংশের কাজ শেষ হওয়ার কথা আছে। এ অংশের অবকাঠামো নির্মাণের অগ্রগতি প্রায় ১৭.৩০ শতাংশ।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন রয়েছে। নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কিছু
কাজ বাকি থাকায় প্রথম দিকে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সকালে সাড়ে
৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা চলবে। মতিঝিল থেকে আগারগাঁও অংশে
শুধু মতিঝিল, সচিবালয় ও ফার্মগেট-এই তিন স্টেশন থামবে ট্রেন। প্রতি ১০
মিনিট পরপর মেট্রোরেল ছাড়বে। আপাতত বিজয়সরণি, কাওরান বাজার,
শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে না।
তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত আগের মতো রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে।
More:
৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একজনও পাস করেনি
একাকিত্ব নিয়ে ফেসবুক ক্যাপশন কবিতা উক্তি এবং স্ট্যাটাস
মালয়েশিয়ায় সেরা কয়েকটি শ্রমিক ভিসা এর সুযোগ সুবিধা এবং বেতন
সুইডেনে কাজের ভিসা ও বেতন ২০২৩
অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন। আবেদন ফি কত?
পারিবারিক সমস্যার জন্য ছুটির আবেদন
বাইক নিয়ে স্ট্যাটাস ক্যাপশন উক্তি।
টাঙ্গাইল জেলার সেরা ২ টি দর্শনীয় স্থান।
গ্রীন লাইন বাসের কাউন্টার নম্বর টিকিটের মূল্য ২০২৩ (Green Line)
মেট্রোরেলের পথ ও স্টেশন
মেট্রোরেল উত্তরা থেকে পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, খামারবাড়ী, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। এ পথের দূরত্ব ২০ কি. মি। এই পথের স্টেশনগুলো হচ্ছে-উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয়সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল। প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে দুই হাজার ৩০৮ জন যাত্রী ধারণ ক্ষমতা। সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার।
মেট্রোরেলের ভাড়া
উত্তরা থেকে মতিঝিল ভাড়া নির্ধায়িত হয়েছে ১০০ টাকা। উত্তরা থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা ও আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর উত্তরা থেকে আগারগাঁও-বিজয়সরণি পর্যন্ত ৬০ টাকা, ফার্মগেট ৭০ টাকা, কাওরান বাজার-শাহবাগ ৮০ টাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেস ক্লাব (বাংলাদেশ সচিবালয়) পর্যন্ত ৯০ টাকা এবং মতিঝিল পর্যন্ত ১০০ টাকা আদাইতো হবে।
পরিশেষে
দেশের প্রথম মেট্রোরেল ঢাকা মেট্রোরেল আজকে আমরা জানতে পারলাম বাংলাদেশ মেট্রোরেল এর ভাড়া, স্টেশন এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে। আশা করা যায় এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক কাজে আসবে। তাই এই সম্পর্কে বিস্তারিত পেয়ারের মাধ্যমে আপনাদের আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবারের অন্য সকল সদস্যদেরকে জানাতে জানাতে ভুলবেন না। লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।