টাঙ্গাইল জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান বাসুলিয়া
দর্শনীয় স্থান বাসুলিয়া – আসসালামু আলাইকুম সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ। আশা করি সবাই ভাল আছেন। প্রতিটি লোকের মাঝেই ভ্রমণ নিয়ে
আলাদা একটি ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া যায়। এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ
করে না। এরকম টাঙ্গাইল জেলায় অনেক ভ্রমণের জায়গা রয়েছে। বাসুলিয়ার চাপড়া বিল তার একটি।
আজকে আমরা এই বাসুলিয়ার চাপড়া বিল সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। আশা করছি এ সম্পর্কে
জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন।
টাঙ্গাইল জেলা বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও ভ্রমণের স্থান নিয়ে ভরপুর। প্রাকৃতিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যে
ভরপুর টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার অন্যতম একটি সুন্দর স্থান বাসুলিয়া (চাপড়া বিল )
বাসাইল বাজার থেকে নলুয়া সড়ক ধরে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে বাসুলিয়া অবস্থিত। এখানে গেলে

দেখতে পাওয়া যায় রাস্তার দু’ধারে দিগন্তের নীচে শুধু পানি আর পানি। এখানে আছে বিশাল একটি বিল । যা ‘চাপড়া বিল নামে পরিচিত ।
বর্ষায় সময় বিলে পরিষ্কার পানি আর পানিতে ভেসে থাকে আকাশের মুখচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যের মাঝে নৌকা ভ্রমণের মজাই আলাদা। চারিদিক থৈ থৈ পানি এবং এই সৌন্দর্য মন্দির তো পরিবেশ সকল
ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করে। প্রকৃতির সেই অপরুপ সৌন্দর্যে সাড়া দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ
এবং পর্যটক ভীড় জমায় এই টাঙ্গাইলের বাসুলিয়ায়। এরপর নৌকা করে ঘুরে বেড়ান এই সুবিশাল বিলে।পর্যটকদের
ঘোরার জন্য ঘাটে বাধা থাকে স্বতাধিক নৌকা। বড় বড় নৌকাতে রয়েছে স্যালো ইঞ্জিন। পর্যটকরা বিনোদনের জন্য
সাথে নিয়ে আসেন মাইক ও বাদ্যযন্ত্র। বর্ষার মৌসুমে সারাদিন নাচে গানে মুখরিত থাকে এই বিলটি।
মানুষ এর সংখ্যা অনুযায়ী নানান আকৃতির নৌকা পাওয়া যায় এই এখানে। আকারে ছোট নৌকাগুলোতে অনায়াসে
৫/৭ জন ওঠা যায়। ভাড়া নেয় ঘন্টা প্রতি ২০০ টাকা (তবে বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে চাহিদা থাকার কারণে এই ভাড়া
পরিমাণ কম বেশি হতে পারে)। যারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মুক্ত আকাশ স্বচ্ছ পানি ইত্যাদি উপভোগ
করতে চান তাদের জন্য এই জায়গাটি আদর্শ। গ্রুপ করে আসলে অনেক অল্প খরচে খুব সুন্দর একটা বিকেল কাটানো সম্ভব এখানে।
বাসুলিয়ার প্রধান আকর্ষণ সুবিসাল হিজল গাছ
বাসুলিয়ার চাপরা বিলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে সুবিশাল হিজল গাছ। চাপড়া বিলের জন্ম ইতিহাস আজ
পর্যন্ত সঠিক কেউ ব্যাখ্যা করতে পারেনি। তবে অনুমান করা হয়ে থাকে নির্জন বিলের মাঝখানে আশ্রিত হিজল
গাছটির বয়স দেড়শত বছরেরও অধিক। গাছটির জন্ম ইতিহাস এবং গাছকে নিয়ে এলাকায় অনেক ধরনের কল্পকাহিনী প্রচলিত রয়েছে।
জনশ্রুতিতে শোনা যায়, কোন এক বর্ষার মৌসুমে ভাসতে ভাসতে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে কালের স্বাক্ষী
এই হিজল গাছটি। তারপর থেকে শতাধিক বছর ধরে বণ্যা, ঘুর্ণিঝড়, সাইক্লোন, টর্নেডোসহ নানা প্রাকৃতিক
প্রতিকূলতার সাথে প্রানপণ লড়াই করে আজো ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে মাথা তুলে দাড়িয়ে আছে গাছটি।
দর্শনার্থীদের লাফালাফিতে প্রতিবছর গাছটির প্রচুর পরিমাণে ডালপালা ভাঙ্গা যায়। তাই গাছটির অস্তিত্ব নিয়ে শঙ্কায়
আছে এলাকাবাসি।বাসুলিয়ার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বর্ষা মৌসুমে বিশেষ করে বছরের দুই ঈদে এখানে দর্শনার্থীরা উপচে পড়া ভিড় জমায়। লোকজন বিভিন্ন যানবাহন
যেমন: নৌকা, মোটরসাইকেল, সিএনসি, প্রাইভেট কার যে যেভাবে পারে এখানে ভ্রমণ করতে আসে।
বাসুলিয়ার চাপড়া বিলে দর্শনার্থীরা ভ্রমণ করতে এসে সাধারণত ছোট ছোট নৌকা নিয়ে হিজল গাছের আশপাশ
দিয়ে ভ্রমণ করার পাশাপাশি আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন। আবেদন ফি কত?
পারিবারিক সমস্যার জন্য ছুটির আবেদন
বাইক নিয়ে স্ট্যাটাস ক্যাপশন উক্তি।
দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে কিছু বিরূপ প্রভাব:
এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট গাছটি পূজনীয়। প্রতিবছর মাঘ মাসের প্রথম দিন সিদ্ধেশ্বরী পূজার আসর বসে ঐ
হিজল গাছের নিচে। গাছটির উপর এরকম নির্যাতন তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতিতে আঘাত হানার ন্যায়। তাই
তাদের উচিত হলো গাছটির উপর এরকম নির্যাতন না করা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে।
চাপড়া বিলের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এই শতাধিক বর্ষীয় হিজল গাছটি। তাই যদি দর্শনার্থীদের অসচেতনতার
কারণে এই গাছটি মারা যায় তাহলে “চাপড়া বিল” এর সৌন্দর্য্য ও দর্শনার্থীদের আকর্ষন বহুলাংশে ক্ষুন্ন হবে।
শতাধিক বছরের ইতিহাসের স্বাক্ষী ঐ গাছটি। ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা বিবেচনা করলেও গাছটিকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সকলেরই দায়িত্বের অন্তর্গত।
কিভাবে যাবেন
বাসুলিয়ার চাপড়া বিলে যেতে হলে মহাখালি থেকে টাঙ্গাইলের বাসে করে সোজা চলে যাবেন টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ড। এক্ষেত্রে ভাড়া-নন এসি বাসে ১৬০ টাকা আর এসি বাসে ২৫০ এর কাছাকাছি। এরপর নতুন বাসস্ট্যান্ড থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে আসতে হবে। অটোতে করে ৫ টাকা নেবে। সেখানে বাসাইলের সিএনজি পাওয়া যাবে। সিএনজিতে ভাড়া নেবে ৩০/৪০ টাকা।
বাসাইল বাজারে গিয়ে সিএনজি থেকে নেমে ভ্যানে করে বাসুলিয়া বিলের পাড়। ভাড়া প্রতিজন ২০ টাকা করে নেবে। দিনে যেয়ে দিনেই ঘুরে ফিরে আসা যায় বাসুলিয়া থেকে। তবে বিলের সবচেয়ে সুন্দর রূপটা উপভোগ করতে হলে বিকেল পর্যন্ত থাকতে হবে।
পরিশেষে
আজকে আমরা আলোচনা করলাম টাঙ্গাইল জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান বাসুলিয়া চাপড়া বিল সম্পর্কে। এবং এ বিলের প্রধান আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী হিজল গাছ সম্পর্কে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরওঃ
৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একজনও পাস করেনি
একাকিত্ব নিয়ে ফেসবুক ক্যাপশন কবিতা উক্তি এবং স্ট্যাটাস
মালয়েশিয়ায় সেরা কয়েকটি শ্রমিক ভিসা এর সুযোগ সুবিধা এবং বেতন