আসসালামু আলাইকুম দর্শক। আশা করি আল্লাহর দোয়ায় সবাই ভাল আছেন। দেশের প্রায় সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। পেঁয়াজ এর ব্যতিক্রম নয়। তাই পেঁয়াজের দাম কমাতে সরকার পেয়াজ আমদানি করার অনুমতি দিয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা এ সম্পর্কে তথ্যগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি সব তথ্য পাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন
পেয়াজ নিত্য প্রয়োজনীয় ফসলের মধ্যে অন্যতম। সব ধরনের রান্নাতেই প্রায় পেঁয়াজের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।কিন্তু কিছুদিন যাবত পেঁয়াজের দাম চড়া মূল্যে পৌঁছেছে।প্রতি কিলো পেঁয়াজ গত রবিবারেও বিক্রি হয়েছে প্রায় ১০০ টাকা মূল্যে! যা বর্তমানে অনেকের সাধ্যের বাইরে তারপরেও সবাই পেঁয়াজ কিনছে। কারণ এটি ছাড়া কোন তরকারি রান্না করা যায় না।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ
পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে তাই এবার কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে । সোমবার থেকে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবে। যদি আমদানি করা যায় তাহলে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমবে বলে সবাই মনে করছেন। কিন্তু কতটা দাম কমতে পারে এ বিষয়ে কারো আইডিয়া নেই। পেঁয়াজ যখন আমদানি করা হবে তারপরেই বোঝা যাবে পেঁয়াজের দাম কতটা কমলো।
বাজারে প্রায় সকল প্রকার দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের মূল্যও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে বিপাকে পড়েছে ভোক্তারা। ফলে ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল রবিবার এ তথ্য তুলে ধরেন।
বর্তমান পেঁয়াজের দাম ও আগের পেঁয়াজের দাম কত ?
এ রবিবার সারা দেশের কাঁচাবাজারে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে পেঁয়াজ তথা সকল দ্রব্যপূর্ণ কেনাই হয়েছে দুরূহ।
বিশ্লেষকদের তথ্য মতে গত একুশে মে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছিল।
Read More: ভারতে ঘটে গেল ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা।
কিন্তু এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে এই পেঁয়াজের মূল্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু এখন পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার উপরে।
পেঁয়াজের সর্বোচ্চ মূল্য দেশের জনগণ দেখেছিল চার বছর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে। সে বছর দেশের জনগণ সর্বোচ্চ পেঁয়াজের মূল্য দেখেছিল প্রতি কেজি ২২০ টাকা। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে পেঁয়াজের সবচেয়ে বেশি দাম। এর আগে বাংলাদেশের মানুষ পেঁয়াজের এত উর্ধ্বগতির দাম দেখেনি।
গত সপ্তাহে কৃষিমন্ত্রী মোঃ আব্দুর রাজ্জাক পেঁয়াজ আমদানি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা প্রকাশ করেন।
পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণে সরকার তাই পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভারতে পেঁয়াজের দাম কত ??
পেঁয়াজ উৎপাদনকারীদের সুরক্ষার জন্য 15 মার্চ থেকে আমদানি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে ভারতে
পেঁয়াজের মূল্য প্রতি কেজি ১১ থেকে ১২ টাকা। যা বাংলাদেশে এক্সপোর্ট করে আনলে সর্বোচ্চ ৩০ টাকায় বিক্রি করা যাবে।
কিন্তু অনেক অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজ গুদামজাত করে এর মূল্য অনেক বাড়িয়ে দেয় যা অনেক ঘৃণিত এবং বিকৃত মস্তিষ্কের কাজ।
দেশে পেঁয়াজের চাহিদা বছরে প্রায় 27.9 লাখ মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর মতে গত দুই বছরে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় 9.90 লাখ মেট্রিক টন।
এই তথ্য থেকে বোঝা যায় বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা অনেক। কিন্তু কয়েক মাস পর বাড়ছে সে পেঁয়াজের দাম।
যদিও বাংলাদেশে অনেক পেঁয়াজ উৎপন্ন হয় তারপরেও বাইরের দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় তা না হলে পুরো দেশের চাহিদা মেটে না।
মোট পেঁয়াজের উৎপাদন ও আমদানি
দুই হাজার একুশ বাইশ অর্থবছরে দেশে মোট পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে 35 লাখ মেট্রিক টন। ২৪ টন এর বেশি পেঁয়াজ
উৎপাদন হয়েছিল এ বছর। পেঁয়া সংরক্ষণ থেকে শুরু করে ভোক্তাদের মাঝে পৌঁছাতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ অপচয়
বাদে মোট উৎপাদন হয়েছে ২৪.৫৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। যা দেশের চাহিদার থেকে ৪ লাখ মেট্রিক টন এর মত কম।
সুতরাং চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ দেশে বিক্রি করতে হলে বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হবেই তাছাড়া কোন
মতেই দেশে মোট চাহিদা মেটানো যাবে না এই এর।
বাংলাদেশ কোন দেশ থেকে বেশি পেঁয়াজ আমদানি করে??
বাংলাদেশ চীন এবং ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পেয়াজ আমদানি করে থাকে। কিছুদিন আগেও আমরা দেখেছি ভারত থেকে পেয়াজ
আমদানি বন্ধ করে দিয়েছিল তারা এজন্য বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে চলেছিল। এক রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট
চাহিদ অনুযায়ী পেঁয়াজ আমদানি করতে হয় প্রায় 40 শতাংশ। এই ৪০ শতাংশ পেঁয়াজের ৯৫ পার্সেন্ট আসেই ভারত থেকে আর ৫% আসে
অন্যান্য দেশ থেকে যেমন ভারত নেপাল ইত্যাদি অন্যান্য দেশ থেকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর হিসাব অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ
আমদানি করেছে ৪ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার বেশি পণ্য। এই আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে রয়েছে পেঁয়াজ সহ নানা নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।
রিপোর্ট অনুযায়ী এর মধ্যে সর্বোচ্চ আমদানি আমদানি হয়েছে চীন থেকে অনুমান করা হয় এই আমদানির শতাংশ ছিল ২৬ শতাংশেরও বেশি।
এরপরেই আমদানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যে দেশ তার নাম হলো ভারত ধারণা করা হয় বাংলাদেশ যত আমদানি আমদানি
করে তার ১৫ শতাংশ আসে ভারত থেকে তাই বলা যায় ভারত থেকেও মোটা অংকের আমদানি করে বাংলাদেশ।
পরিশেষে
আজকে আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করলাম পেঁয়াজের মজুদ ও সরবরাহ ব্যবস্থা।এছাড়াও আর্টিকেলটিতে
আলোচনা করা হয়েছে পেঁয়াজের আমদানি এবং বর্তমান বাজার মূল্যের সম্পর্কে। আশা করা যায় আর্টিকেলটি দ্বারা আপনারা
কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। এখানে আমরা আরো
আলোচনা করলাম দেশে মোট পেঁয়াজ এর চাহিদা কত এবং দেশি মোট কত শতাংশ উৎপন্ন হয়। বাংলাদেশ কোন দেশ থেকে
বেশি পেয়াজ আমদানি করে এটাও মোটামুটি জানতে পারলাম। বাংলাদেশ প্রতিবছর কি পরিমান টাকা আমদানিতে ব্যয় করে
তার একটা ধারণা পেলাম এবং শেষে জানতে পারলাম কি পরিমান পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে অন্যান্য দেশ থেকে এছাড়াও টাকার একটা ধারণা ও পেলাম।
আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার যদি মনে হয় আর্টিকেলটি পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছে
তাহলে অন্য জনকে শেয়ারের মাধ্যমে এটা পৌঁছে দিবেন যাতে তারও অনেক উপকার হয় এসব তথ্য জেনে।