কয়লা সংকটে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎ।কেন্দ্রের উৎপাদন ফলে বাড়ছে বড় ধরনের লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা।
আর এর পেছনে বড় কারণ হচ্ছে কয়লা সম্পদ । 1320 মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালাতে দৈনিক 12 হাজার টন কয়লা ।
প্রয়োজন পড়ে মাসের হিসেবে যার পরিমাণ দাঁড়ায় 360000 ton ।এত পরিমাণে কয়লা যোগান দেয় ইন্দোনেশিয়া ।

সংকটের কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বকেয়া বিল রয়েছে তিন হাজার 135 কোটি টাকা ।
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থায় বকেয়া বিল পরিশোধ করতে পারছেনা পিডিবি ।
আর এত পরিমাণ অর্থ বকেয়া থাকায় কয়লা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ান কোম্পানি বায়ান রেসোর্স টিভি ।
অর্থ পরিশোধ না করে কোম্পানিটি আর কয়লা সরবরাহ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ।
অপরদিকে কয়লা সরবরাহ করে বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের উপরকয়লা আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
কবে বন্ধ হবে ???
চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বর্তমানে যে পরিমান কয়লা মজুদ আছে তা দিয়ে 2 জুন পর্যন্ত প্লান্ট চালু রাখা যাবে ।
এরপরে প্লান্টের দুটো ইউনিটি বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দিতে হবে কতৃপক্ষকে আরে তাপবিদ্যুৎ
কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে বড় ধরনের লোডশেডিংয়ের কবলে পড়বে পুরো দেশ বিশেষ করে খুলনা ও বরিশাল
অঞ্চল ছাড়াও ঢাকায় এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় ।
Read More : বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
তাই এ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে সবচেয়ে বেশি খোকান দিতে পর্বে খুলনা ও বরিশাল জেলার মানুষ ।
উৎপাদন ক্ষমতা
সূত্র বলছে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা 1320 মেগাওয়াট হলেওপ্রকৃত উতপাদন 1244 মেগাওয়াট ।
যৌথ মালিকানায় রয়েছে দেশের নর্থ-ওয়েস্টপাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের
রাষ্ট্রয়ত্ত চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্টএন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন । আর এই দুই প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা
করেছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড বা বিসিপিসিএল ।
এতদিন ধরে কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে অর্থ পরিশোধ করে আসতে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন ।
মোট বকেয়া কত ?
তবে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কয়লা আমদানির মোট বিল বকেয়া পড়েছে 293 বিলিয়ন ডলার বা তিন হাজার 135 কোটি 10 লাখ টাকা ।
পরিশোধ না করা হলে কয়লার জন্য আর অর্থদেবে না প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পরিশোধে বিসিপিসিএল পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রকর্তৃপক্ষের
মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয় ও পৃথিবী কে অবহিত করলেও পিডিবি জানায় বর্তমান ডলার সংকটের কারণে বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধে আপাতত সক্ষম নয় তারা ।
এ প্রসঙ্গে বিসিপিসিএল এরব্যবস্থাপনা পরিচালক এম খোরশেদুল আলম জানান
ডলার পরিশোধ নাকরার আগে কয়লার চালান বন্ধ হয়ে গেছে এখন যতটুকু কয়লা মজুদ আছে তা দিয়ে আগামী কয়েকদিন ফ্ল্যাশ চালু রাখা যাবে
করে এ কর্মকর্তা আরো বলেন মূল সমস্যা হলো ডলার সংগঠন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছেতারা 10 কোটি ডলার প্রদানের
একটা ব্যবস্থা করেছে যদিওতা যথেষ্ট নয় এছাড়া বিল পরিশোধ করে নতুন করে কয়লা আমদানি করতে প্রতিষ্ঠার
সময় লেগে যাবে ফলে যুনে প্রায় পুরোটা সময় প্লান্ট বন্ধ থাকবে ।
PDB এক কর্মকর্তাএ সংকটের ব্যাপারটি স্বীকার করে বলেন পায়রার লোডশেডিং
এর পরিমাণ বেড়ে যাবে তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে বকেয়া পরিশোধ করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখার ।
এখন আমরা জেনে নিব পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কেঃ
পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্ট: বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিপ্লব ঘটাচ্ছে
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দেশের জ্বালানি খাতে অগ্রগতি ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
এই অত্যাধুনিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উন্নত প্রযুক্তি এবং অত্যাধুনিক অবকাঠামোতে সজ্জিত,
দেশের ক্রমবর্ধমান শক্তির চাহিদা মেটাতে নির্ভরযোগ্য এবং দক্ষ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

1,320 মেগাওয়াট (মেগাওয়াট) এর মোট স্থাপিত ক্ষমতা সহ, পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্ট বাংলাদেশের শক্তি ঘাটতি মোকাবেলায় এবং আমদানি করা
বিদ্যুতের উপর নির্ভরতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পরিবেশ বান্ধব অতি-সুপারক্রিটিকাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে, কার্বন
নিঃসরণ কমিয়ে দেয় এবং টেকসই শক্তি অনুশীলনের প্রচার করে।
পায়রা সমুদ্র বন্দরের কাছে পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্টের কৌশলগত অবস্থান একটি অবিচ্ছিন্ন এবং নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করে
কয়লার নিরবচ্ছিন্ন আমদানি সক্ষম করে। প্ল্যান্টের দক্ষ ক্রিয়াকলাপ এবং শক্তিশালী রক্ষণাবেক্ষণ প্রোটোকলগুলি এর উচ্চ প্রাপ্যতা ফ্যাক্টরটিতে
অবদান রাখে, যা সারা দেশে শিল্প, ব্যবসা এবং পরিবারের জন্য একটি স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহের গ্যারান্টি দেয়।
শক্তি সেক্টরে এর প্রভাবের বাইরে, পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্ট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ইঞ্জিন হিসেবেও কাজ করে।
এর নির্মাণ এবং চলমান ক্রিয়াকলাপগুলি অসংখ্য কাজের সুযোগ তৈরি করেছে, স্থানীয় সম্প্রদায়কে উপকৃত করেছে এবং আঞ্চলিক উন্নয়নকে উদ্দীপিত করেছে।
বাংলাদেশ যখন একটি উন্নত জাতি হয়ে ওঠার স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্টটি টেকসই এবং নির্ভরযোগ্য
শক্তির উৎসের প্রতি দেশের অঙ্গীকারের প্রমাণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এটি শক্তির স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং তার নাগরিকদের
জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে শক্তিশালী করার দিকে দেশের যাত্রায় একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক প্রতিনিধিত্ব করে।
দর্শক বন্ধুরা কেমন লাগলো এই প্রতিবেদনটি। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ ।